মিশরের যে সব শাসক তথা ফারাওদের নিয়ে মানুষের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ, তাঁদের মধ্যে অন্যতম রানি ক্লিয়োপেট্রা। শোনা যায়, রাজত্বের শেষে অবমাননা থেকে বাঁচতে ক্লিয়োপেট্রা আত্মহত্যা করেন। কিন্তু অন্যান্য বহু ফারাওয়ের সমাধির খোঁজ মিললেও কালস্রোতে হারিয়ে যায় ক্লিয়োপেট্রার সমাধি। সেই হারিয়ে যাওয়া সমাধিরই খোঁজ মিলতে চলেছে, দাবি করলেন একদল প্রত্নতত্ত্ববিদ।

সান ডোমিংগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ ক্যাথলিন মার্টিনেজের নেতৃত্বে একদল গবেষক জানিয়েছেন, মিশরের টাপোসিরিস মাগনা নামের এক প্রাচীন মন্দিরের তলায় মিলেছে এমন একটি সুড়ঙ্গ, যা হদিস দেবে ক্লিয়োপেট্রা ও তাঁর প্রেমিক অ্যান্তনির সমাধির। মিশরের পর্যটন ও পুরাতত্ত্ব বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সদ্য আবিষ্কৃত সুড়ঙ্গটি পাথর খোদাই করে তৈরি। মাটির প্রায় তেতাল্লিশ ফুট গভীরে থাকা এই সুড়ঙ্গটির দৈর্ঘ্য দেড় কিলোমিটারের কাছাকাছি।

ক্যাথলিন প্রায় পনেরো বছর ধরে এই সমাধির খোঁজ করছেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রাচীন মিশরে অমরত্বের প্রত্যাশায় বিভিন্ন রীতি মেনে নিজেদের সমাধির ব্যবস্থা নিজেরাই করতেন ফারাওরা। ক্লিয়োপেট্রা ও তাঁর প্রেমিক অ্যান্তনিও সেই লক্ষেই বিশেষ ভাবে নিজেদের সমাধি নির্মাণ করেছিলেন বলে মত তাঁর। যে মন্দিরের তলায় সুড়ঙ্গটি পাওয়া গিয়েছে, সেটি ক্লিয়োপেট্রার রাজত্বকালের সমসাময়িক। কিন্তু তাঁর পর কেটে গিয়েছে প্রায় দু’হাজার বছর। এর মধ্যে অন্তত তেইশ বার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে এই এলাকা। আর তাতেই মাটির তলায় জলে নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছে সমাধিটি। মাটির এত গভীরে সেই সুড়ঙ্গের প্রান্তে পৌঁছনো কার্যত অসম্ভব। তবু হাল ছাড়তে রাজি নন প্রত্নতত্ত্ববিদ। প্রায় একশো বছর আগে তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কৃত হয়। এখনও পর্যন্ত সেই আবিষ্কারকেই মিশরের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অনুসন্ধান বলে মনে করা হয়। ক্যাথলিনের দাবি, যদি সত্যিই ক্লিয়োপেট্রার সমাধি খুঁজে পাওয়া যায়, তবে মিশরের ইতিহাসের ক্ষেত্রে একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় আবিষ্কার হবে।

লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে?