হিপোক্রেসি এবং
পশ্চিমী হিপোক্রেসি কাকে বলে জানেন ! জানুন । ইউরোপীয়ান কান্ট্রিগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ইউক্রেনকে দান করেছে 1.03 বিলিয়ন ডলার। তাও গত ছ মাস ধরে মাসিক কিস্তিতে ধরে নিতে পারেন।
আর গত এক মাসে রাশিয়া থেকে কত ডলারের তেল আর প্রাকৃতিক গ্যাস কিনেছে, তার আন্দাজ আছে ! আন্দাজ করুন। আন্দাজ করুন।
যদি না করতে পারেন, তাহলে জানবেন, পরিমাণটা হল 43 বিলিয়ন ডলার।
অর্থাৎ রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে ইউক্রেনকে যা দিয়েছে, রাশিয়াকে দিয়েছে তার 42 গুণ ! হ্যাঁ এর মধ্যে রাশিয়ার প্রোডাকশন কস্ট আছে । ইউক্রেন আর বেলারুশের মধ্যে দিয়ে পাতা গ্যাসের পাইপ লাইন ব্যবহার করার জন্য প্রদেয় কমিশন আছে। শুনে অবাক হলেও জানবেন এটাই সত্যি যে রাশিয়া চুক্তি অনুযায়ী এখনও ইউক্রেনকে 2.15% কমিশন দিচ্ছে যে পরিমাণ গ্যাস ইউক্রেনের পাইপলাইন দিয়ে যাচ্ছে তার জন্য। এটাই অর্থনীতি। এই জন্য এখনও শুনবেন না যে রাশিয়া ইউক্রেনের গ্যাসের পাইপ লাইন ধবংস করে দিয়েছে। করে নি। আর করবেও না। কারণ ওই পথেই আগত পশ্চিমী অর্থ দিয়ে রাশিয়া আরও অস্ত্র বানাবে আর ইউক্রেনের নাগরিকদের মারবে। সোজা কথায় এই হল — যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।
ইনফ্যাক্ট এই যুদ্ধটাও হচ্ছে ইউক্রনের মর্জি মাফিক কমিশন চাওয়াকে কেন্দ্র করে, ন্যাটোয় যোগদানকে কেন্দ্র করে আদৌ নয়। ন্যাটো সদস্যভুক্ত দেশ হওয়া সত্বেও হাঙ্গেরি যে আজ ইউক্রেনকে কষে গাল পেরেছে তার কারণ ও ওই একই । গত জানুয়ারি মাসে যেই ইউক্রেন নিজের কমিশন 1.33% থেকে বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ করে দিয়েছিল সেদিন থেকেই হাঙ্গেরির গ্যাস বিল প্রায় 37% বেড়ে গেছিল। তাই আজই হাঙ্গেরির সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট কড়া কথা শুনিয়েছেন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতিকে।
ইনফ্যাক্ট ইউরোপীয়ান কান্ট্রিগুলো গত একমাসে 15% বেশি তেল আর গ্যাস কিনেছে রাশিয়ায় কাছ থেকে।
এবার আমাদের বড়দা আমেরিকার কথায় আসি। বড়দা, আমার দশ সেয়ানার – এক সেয়ানা। কাণ্ড দেখুন , বড়দার।
হতভাগা নিজে গত একমাসে প্রায় 13% বেশি তেল আর গ্যাস কিনেছে রাশিয়ার কাছ থেকে। উপরন্তু নিজের দেশের লোকজন যাতে বিন্দাস খেয়েপরে মস্তিতে থাকতে পারে তার জন্য ফার্টিলাইজারকে আবশ্যক লিস্টিতে রেখে দিয়ে বিপুল পরিমাণ সার আমদানি করছে রাশিয়া থেকে। সাথে বিপুল পরিমাণ ইউরেনিয়াম।
নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমদানির রাস্তা খুলে রেখে এখন ভারতকে চোখ রাঙাচ্ছে , ” হেই, টোমরা রাশিয়া থেকে টেল কিনিবে, কেন ! “
পাজির পা ঝাড়া দেশ এক খানা। তবে আশার কথা একটাই, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে কোল্ড ওয়ার চলাকালীন নেহেরু আর ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মিলে যে জোট নিরপেক্ষ নীতির প্রণয়ন করেছিলেন তার প্রভাব আজ যেন আরও বেশি প্রত্যক্ষ হচ্ছে। তখন বিশ্বজুড়ে প্রায় 90টা দেশ বলেছিল যে আমরা রাশিয়া বা আমেরিকা কারুর জোটেই থাকব না। আজ সেই সংখ্যাটা প্রায় 150 টা দেশে পৌঁছে গেছে।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র নেতারা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েছেন। তারা দেখতে পাচ্ছেন যে ইউরোপীয়ান দেশগুলো নিজেদের প্রয়োজনে কোনও নীতিরই ধার ধারে না।
তবে সমস্যা একটাই। যুদ্ধ যত দীর্ঘ হবে। বুচায় রাশিয়ার গণহত্যা সংক্রান্ত ঘটনা যত বেশি প্রকাশ হবে, বিশ্ব তত দ্রুত রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেতে বাধ্য হবে। আজ যেমন রাশিয়ার নির্দেশ অমান্য করেও , ইন্ডিয়া রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার মানবধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নে অনুপস্থিত থাকল। রাশিয়ার ক্ষতি হল।
ইন ফ্যাক্ট, যুদ্ধ অপরাধীর তকমা কোন দেশ আর যেচে নিজের গায়ে লাগাতে চায় , বিশেষ করে যে যুদ্ধে তার কোনও লাভ নেই !