5 G কি?
5G কি?
“G” কথার অর্থ হল’জেনারেশন'(Generation)এবং 5G মানে হলো 5th Generation বা মোবাইল নেটওয়ার্কের পঞ্চম প্রজন্ম। 1G, 2G থেকে শুরু হওয়া এই ডিজিটাল নেটওয়ার্ক সূচনা আধুনিক হয়ে 3G পেরিয়ে 4G হয়ে যায়।
ভারতে কে প্রথম 5G Technology শুরু (launch) করে?
ভারতে সর্ব প্রথম 5G টেকনোলজি শুরু(launch) করে Airtel। তারপর শুরু করে রিলায়েন্স JIO । বর্তমানে বেরিয়েছে 5G ফোন ও। ইতিমধ্যে, SAMSUNG থেকে শুরু করে REDMI সমস্ত নামী android ফোন কোম্পানি launch করেছে তাদের 5G ফোনের মডেল। যদিও ২০১৯ সালে গোটা বিশ্বে প্রথম 5G কানেক্টিভিটি নিয়ে আসে দক্ষিণ কোরিয়া।
4G এবং 5G র মধ্যে পার্থক্য কি?
এবার আমরা জেনে নেবো যে 4G আর 5G র মধ্যে পার্থক্য ঠিক কোথায়।
খুব সোজা ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় যে 5G আসলে 4G র থেকে অনেক বেশি Speed ক্যাপাসেটির, বড়, দ্রুত আর আরও বেশি Effective। এটি মোবাইল ডাটা স্পিড (Data speed)আর এখনকার দ্রুততম হোম ব্রডব্র্যান্ডের(Broadband) থেকে অনেক বেশি দ্রুত।
প্রতি সেকেন্ডে 100 গিগাবাইটের(Gbps) স্পিড নিয়ে 5G, 4G এর থেকে 100 times বেশি দ্রুত।
4G আর 5G এর মুল পার্থক্য লো লেটেন্সি(latency)। Latency মানে কোন ডিভাইস থেকে ডাটা অন্য কোন ডিভাইসে পাঠানো হলে সেন্ডারের ডিভাইস থেকে রিসিভারের ডিভাইসে পৌছানোর মোট সময় ৷ লেটেন্সি কম হওয়ার মানে এই যে আপনি আপনার ফোনের ডাটা আপনার কেবেল modem এবং Wi-Fi এর কাজে ব্যবহার করতে পারবেন। আর এর পাশাপাশি খুব অল্প সময়ের মধ্যে আপনি যে কোন কিছু আপলোড বা ডাউনলোড করতে পারবেন, বলা ভাল মুহূর্তের মধ্যে সব কাজ হয়ে যাবে।
মোবাইল টেকনোলজির অভিযোজন-
1G
মোবাইল ফোনের প্রাথমিক পর্যায় ছিল 1G, যা 1980-এর দশকে সামনে এসেছিল। তখন অবশ্য মানুষ নিজেরাও ভাবেনি যে তারা যে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে তা ভবিষ্যতে 1G নামে পরিচিত হবে। আপনাদের অনেকেরই হয়তো মনে আছে বা আপনারা সিনেমায় দেখে থাকবেন যে তখনকার দিনে লম্বা অ্যান্টেনা সহ মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হত। সেগুলো ছিল প্রথম প্রজন্মের মোবাইল ফোন। 1G মোবাইল ফোনের টেলিকমিউনিকেশন স্পিড ছিল 24kb/s অর্থাৎ 24 কিলোবাইট প্রতি সেকেন্ডে।
যদিও সেই সময় স্পিড খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না, কারণ তখন মানুষের চাহিদা এমন ছিল না। কিন্তু কম স্পীড ছাড়াও এই প্রজন্মের সবচেয়ে বড় অপূর্ণতা ছিল সেই ফোন থেকে কোনো মেসেজ করা যেত না। এই প্রযুক্তিতে ডিজিটাল নয় শুধু এনালগ কাজই সম্ভব ছিল। ফোনে শুধুমাত্র এনালগ সিগন্যাল আদান-প্রদান করা হতো এবং এর সাহায্যে ভয়েস কলিং করা হতো। এই ফোনে কোনো SMS ছিল না।
2G
1990-এর দশকে এন্ট্রি নিয়েছিল 2G। এই প্রযুক্তির সাহায্যে, স্পিড বৃদ্ধি করা হয়েছিল, যা 64kb/s অর্থাৎ 64 কিলোবাইট প্রতি সেকেন্ডে পৌঁছেছিল। যদিও এই স্পিডকেও খুব বেশি বলা হবে না, তবে এই প্রজন্মের বিশেষত্ব ছিল, এই প্রজন্মে যুক্ত হয়েছিল মেসেজ। 2G এর মাধ্যমে মোবাইল ফোনে ভয়েস কলের পাশাপাশি মেসেজ এর প্রচলন শুরু হয়েছিল।
2G এর সময় চালু হয়েছিল SMS। এটিই সেই সময় ছিল, যখন একটি মেসেজের জন্য 3 টাকা পর্যন্ত চার্জ করা হত এবং শব্দের সীমাও ছিল। 2G এর যুগ মোবাইল ফোনকে প্রতিযোগিতামূলক করে তুলেছিল এবং মানুষজন পকেটে ফোন নিয়ে হাঁটতে শুরু করেছিল। সেই সময় ফোনে ছবি আদান-প্রদান শুরু হলেও ট্রান্সফার এর স্পিড ও মিডিয়ার মান ছিল বেশ কম।
3G
মোবাইলের তৃতীয় প্রজন্মের নেটওয়ার্ক গতি কিলোবাইট থেকে মেগাবাইটে পৌঁছে গেছিল। 2003-2004 সালে, 3G এর প্রবেশ সম্পূর্ণ হয় এবং এর সাথে মাল্টিমিডিয়া মোবাইল ফোনের সূচনা হয়। অর্থাৎ এই প্রজন্ম ভয়েস কলিং ও SMS কে এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়েছে। যখন 3G এসেছিল, তখন মোবাইল ফোনগুলি 2mb/s পর্যন্ত স্পিড পেতে শুরু করেছিল।
3G তে ফোনে কথা বলা ও মেসেজ করার পাশাপাশি ইন্টারনেটও ব্যবহার করা হচ্ছিল। সেই সময় Facebook এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং ইউটিউবের মতো ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপ সদ্য মার্কেটে আধিপত্য বিস্তার শুরু করেছিল। কিন্তু কম ইন্টারনেট স্পিডের কারণে ইউটিউবের মতো পরিষেবাগুলিকে বাফারিংয়ের মুখোমুখি হতে হত এবং এর জন্য, HHPA+ এবং HHSPA Turbo-এর মতো ভার্সনগুলিও চালু করা হয়েছিল, তার পরে স্পিড 42 Mbps এ পৌঁছেছিল।
4G
3G-এর স্পিড আরও ত্বরান্বিত করার জন্য, 2009 সাল নাগাদ, 4G মার্কেটে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল। এই যুগে মোবাইল ফোন কম্পিউটারের সমান এবং ফোন স্মার্টফোনে পরিণত হয়েছে। এই প্রজন্মের সাথে যুক্ত হয়েছে এবং 4G LTE এবং 4G VoLTE। এই সময় ফোনে ভয়েস কল, SMS এবং ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের পরে, মোবাইল ফোনে ভিডিও কলিং শুরু হয়।
প্রাথমিকভাবে, যেখানে অ্যানালগ সিগন্যালে কল করা হত, সেখানে 4G ইন্টারনেট ব্যান্ডেও ভয়েস কল শুরু হয়েছিল। 4G নেটওয়ার্কে ইন্টারনেটের স্পিড বেড়েছে 100mb/s অর্থাৎ 100Mbps। 4G কে মোবাইল টেকনোলজিসর সবচেয়ে বড় উন্নয়ন বলা যেতে পারে কারণ স্মার্টফোন ভবিষ্যতের জন্য অনেক পথ খুলে দিয়েছে। 4G যুগে মোবাইল ফোনের মাল্টি-ডিভাইস কানেকশনও সম্ভব হয়েছে। এখন আমরা 4G ফোন ব্যবহার করছি, বর্তমানে 4G এর সর্বোচ্চ স্পিড 600mbps।
5G
বিশ্বে 5G পরিষেবা শুরু হয়ে গেছে এবং ভারতেও এর ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে। ভারতে ইতিমধ্যেই 5G ফোন পাওয়া যাচ্ছ তবে 5G নেটওয়ার্ক এর জন্য আগামী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। 5G-তে ইন্টারনেটের স্পিড মেগাবাইট থেকে গিগাবাইটে বাড়তে চলেছে এবং এটি 1gbps অর্থাৎ 4G এর চেয়ে 100 গুণ বেশি ইন্টারনেট স্পিড পাবে।
5G টেকনোলজি শুধুমাত্র মোবাইল ফোনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং বাল্ব, ফ্যান, ফ্রিজ এবং গাড়িও 5G এর সাথে কানেকটেড থাকবে। 5G-তে, IoT-তে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে এবং এই টেকনোলজির সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে যে সমস্ত যন্ত্রপাতি এবং ডিভাইসগুলি একে অপরের সাথে কানেক্টেড থাকবে। অন্য কোনো শহর থেকে ফোনে কোনো কমান্ড দিলেও আপনার বাড়িতে রাখা সেই জিনিসই কাজ করবে। অর্থাৎ দিল্লিতে বসে ফোনে বাল্ব অন করলে ইউপির বাড়িতে বসানো বাল্ব জ্বলে যাবে। 5G-এর মাধ্যমে, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কারখানা, মল, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন এবং হোটেলের মতো জায়গায় সমস্ত সিস্টেম একে অপরের সাথে কানেক্টেড হতে পারবে।