এনাকে চিনুন
শের জঙ্গ – বিস্মৃতির গর্ভে তলিয়ে যাওয়া ভারতমাতার এক বীর সন্তান।
ক্লাস সেভেন। বাবার এক সহকর্মীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে টেবিলের ওপর রাখা একটি বই নজর কেড়ে নেয়। বইয়ের মলাটে ডোরাকাটা বাঘের দুর্দান্ত ইলাস্ট্রেশন। তখন শিকার কাহিনী পড়ার আগ্রহ প্রবল। জিম করবেটের কিছু লেখা মনে ছাপ ফেলেছে। আরো ভালো লাগে বইটা বাংলায় লেখা এবং বইয়ের নাম “ডোরাকাটার অভিসারে”। লেখকের নাম শের জঙ্গ। ক্লাস সেভেনের আগ্রহ ভাবতে থাকে, কি সাংঘাতিক ব্যাপার, বাঘের বইয়ের লেখকের নামও শের দিয়ে শুরু! বেশ রোমাঞ্চকর! বইটা চেয়ে নিয়ে পড়া শুরু হয়। বেশ মোটাসোটা বই, কিন্তু বাড়িতে এসে এক নিশ্বাসে শেষ হয়ে গেল। রুদ্ধশ্বাস কিছু বাঘ শিকারের কাহিনী। সঙ্গে মিলল জঙ্গল ভ্রমণের উত্তেজনা আর অন্য চোখে দেখা বন জঙ্গল প্রকৃতির খবর। দু মলাটের মধ্যে অফুরন্ত রত্নসম্ভার। সে বইকে এতই মনে ধরেছিলো যে আরেকবার পড়ার পরে তবেই ব্যথিত চিত্তে ফেরত দেওয়া সম্ভব হয়।
তারপর বেশ কয়েক দশক কেটে গেলেও, বইটার কথা মনের মণিকোঠায় রয়ে গেছিলো। আজ থেকে কিছু মাস আগে হঠাৎ বইটা আবার পড়ার ইচ্ছে প্রবল হয়ে ওঠে। শুরু হয় বইয়ের খোঁজ। আঁতিপাতি করে কলেজ স্ট্রিটে বাংলা বইয়ের দোকানে খোঁজা হলেও, কেবল এটুকু জ্ঞান ছাড়া কিছুই লাভ হয় নি যে, অনেকেই বইটির নামই শোনেননি! অগত্যা গুগলের দ্বারস্থ হতে হলো। লেখকের নাম দিয়ে সার্চ করে জানা যায় “ডোরাকাটার অভিসারে” একটি ইংরেজি বইয়ের বাংলা অনুবাদ। ইংরেজি বইটির নাম “ট্রাইস্ট উইথ টাইগার্স”। ছোটবেলায় যে কৌতুহলটা ছিল না সেটা এখন বেশ চাগাড় দিয়ে উঠলো। শের জঙ্গ সম্পর্কে আরও কিছু জানার আকাঙ্ক্ষা তখন দুর্দমনীয়। অগত্যা সেই গুগলই ভরসা।
এবার এলো এক মহা চমকের পালা। লেখকের সম্পর্কে পুরোটা জানার পর বেশ কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসে থাকা ছাড়া আর কিছু করা সম্ভবপর ছিলো না। একদিকে ছিল নতুন কিছু জানার আনন্দ, অন্যদিকে এক অসম্ভব লজ্জা গ্রাস করছিলো ক্রমশ। বছর দুই আগে এক বন্ধুকে দুঃখ করে বলা কথা যে এত নির্মমভাবে অনুভব হবে সেটা বলার সময়ও কল্পনা করা সম্ভব হয় নি। ভারতবাসীদের সবিশেষ দুর্ভাগ্য যে, ভারতবাসীরা ভারতমায়ের সত্যিকারের সেরা সন্তানদের চেনে না। সেই কথা যে কতটা সত্যি, সেটা প্রাণে বড় বেজেছিলো। ভারতমায়ের অসীম সাহসী, দুরন্ত বীর সন্তান শের জঙ্গ। বিস্মিত লাগছিলো এই ভেবে যে এই মানুষটির কথা কেন ভারতবাসীরা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে পড়েনি! পাঠ্যপুস্তকের কথা না হয় বাদই থাক, অন্য কোথাও এঁর নাম শোনা বা পড়াও কেন হলো না?
শের জঙ্গ এর সম্পর্কে ওঁর চরিতাখ্যায়ক বলেছেন – “শের যখন ছোট ছিলেন তখন ছিলেন বড়দের অবাধ্য। উচ্চ বংশে জন্মেও, জাতি প্রথার প্রবল বিরোধী। রাজবংশে জন্মেও রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে। সাধারণ মানুষ হিসেবে সবসময়ই প্রতিষ্ঠান বিরোধী। ব্রিটিশ সরকারের বন্দী হিসেবে সরকার বিরোধী। অনন্ত এক বিপ্লবী মন। লড়াই করতে করতে ক্লান্ত হয়েছেন, হতাশ হয়েছেন, মাঝে মাঝে ভেঙ্গেও পড়েছেন। কিন্তু কোনদিন পরাজয় স্বীকার করেন নি।”
শের জঙ্গ এর জন্ম ২৭ শে নভেম্বর ১৯০৪ সালে। জন্মস্থান নাহান গ্রাম, হিমাচল প্রদেশ। বাবা চৌধুরী প্রতাপ সিং সির্মৌর স্টেটের কালেক্টর ছিলেন। একরকম সোনার চামচ মুখে নিয়েই জন্ম বলা যায়। স্কুলে পড়াশোনা কম, বকাঝকা আর মারধোর বেশি এই অভিযোগ করে, ক্লাস ফোর থেকে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিলেন। বিদ্রোহী শিশুকে বাবার হাজার অনুরোধ, মায়ের কান্না কিছুই টলাতে পারলো না। স্কুল ছাড়লেও শিক্ষা থেমে থাকে নি। অসম্ভব মেধাবী এই ছাত্রটির পড়াশোনা চলতে থাকল বাড়িতে, বাবার কাছে। পড়াশুনো শেষ করে, যখন মন চায় উধাও হয়ে যেতেন শিবালিক পর্বতের পাদদেশের গভীর বনে। আপন মনে বনে ঘুরে বেড়ানো ছিল ওঁর নেশা। বাড়ির লোকজনেরা ভয় পেতেন কারন বনে আছে প্রচুর বাঘ, চিতাবাঘ ও ভালুক। সব ভয়ঙ্কর শ্বাপদ। কিন্তু কে শোনে কার কথা! একদিন এমনও হয়েছে যে সকালবেলায় বেরিয়ে সারাদিন জঙ্গলের মধ্যে ঘুরে বাড়ি ফিরেছেন সন্ধ্যেবেলায়। ছোটবেলা থেকেই থেকেই বন্দুক পিস্তল এসব নিত্যসঙ্গী। হাতের মারও নিখুঁত। ‘শার্প-শুটার’ যাকে বলে। প্রথম বাঘ শিকার ১৪ বছর বয়সে। সে ছিল এক মানুষখেকো বাঘ। জঙ্গলকে ভালোবাসার সঙ্গে সঙ্গে শিকারও করতেন। মানুষখেকো বা গবাদি পশুখেকো বাঘই সাধারনত উনি মারতেন।
শের জঙ্গ এর এই প্রতিবাদী স্বভাব তার বাবার উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছিল। তাই বাবা শেরকে কিছুদিনের জন্য তাঁর বোনের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বোনের স্বামী প্রফেসর উদয় বীর সিং শাস্ত্রী বিপ্লবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অসম্ভব ভালোবাসতেন। তাঁর বাড়ি ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য অবারিত দ্বার। সেখানে আসা-যাওয়া ছিল সর্দার ভগৎ সিং ও অন্যান্য বিপ্লবীদের। এখানেই ভগৎ সিং এর সঙ্গে আলাপ হয় শের জঙ্গ এর। স্বাভাবিক ভাবেই শের জঙ্গ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাকে সাড়া দেন। যোগ দেন হিন্দুস্তান সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশনে। শেরের দেশের প্রতি ভালোবাসা আর আগ্নেয়াস্ত্রের ওপর অসম্ভব দক্ষতা ভগৎ সিং কে মুগ্ধ করেছিল। শের জঙ্গ এর উপর দায়িত্ব পড়ে আহমেদগড়ের ট্রেন লুঠ করার। লুঠের টাকা দিয়ে বন্দুক ও অস্ত্রশস্ত্র কেনার কথা ছিল।
শের জঙ্গ ট্রেনটি লুঠ করেন কিন্তু বেশ কিছু টাকা পয়সা ট্রেনের গার্ড লুকিয়ে ফেলে। সুতরাং এই প্রচেষ্টা পুরোপুরি সফল হয়নি। এই ঘটনার পরে শের জঙ্গ নিজের পরিচিত শিবালিক পাহাড়ের জঙ্গলে গা-ঢাকা দেন।
স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয় বৃটিশ আর্মির চিরুনি তল্লাশি। শের শিবালিক পাহাড়ের জঙ্গলকে নিজের হাতের তালুর মতো চিনতেন। তাই ব্রিটিশ আর্মিকে নাস্তানাবুদ করতে বেগ পেতে হয়নি। মাসের পর মাস তল্লাশি চালিয়েও শের জঙ্গকে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয় ব্রিটিশ সরকার। জীবিত বা মৃত যে কোনো অবস্থাতে ওঁকে খুঁজে দিতে পারলে ৩০ হাজার টাকার পুরস্কার ঘোষনা হয়। আশেপাশের সব জায়গায় শের জঙ্গ এর ছবি দিয়ে পোস্টার সাঁটানো হয়। এই অবস্থায় শের জঙ্গ এমন একটা কাজ করলেন যেটা ভাবলেও গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। উনি ঠিক করলেন সরকারের কাছে ধরা দেবেন। ঘটনা সাজিয়ে, এক গ্রামবাসীর হাত দিয়ে ধরা দিলেন। গ্রামবাসীর পাওয়া পুরস্কারের ৩০ হাজার টাকার পুরোটাই চলে যায় বিপ্লবীদের কাছে। এটাই উদেশ্য ছিল। এরকম ঘটনা বোধকরি পৃথিবীতে বিরল।
বিচারে শের জঙ্গ এর ফাঁসির হুকুম হয়। যদিও জেলে পড়াশোনা করার অভ্যাস ও অসম্ভব ভদ্র ব্যবহারের জন্য ফাঁসির হুকুম রদ হয়ে সেটা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দর কুমার গুজরাল তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন – “যখন লাহোর কলেজে পড়তাম, সেখানে শের জঙ্গ এর বীরগাথা ছাত্ররা কোরাস করে গাইতো। এমনই ছিল ওঁর প্রভাব ছাত্রদের উপরে।”
রানা জঙ্গ বাহাদুর ছিলেন তখনকার দিনের বিখ্যাত কাগজ দ্য ট্রিবিউনের সম্পাদক। বিপ্লবীদের প্রতি অত্যন্ত সহানুভূতিশীল ছিলেন তিনি। ১৯৩০ সালে নির্মলা নামে একটি কলেজের ছাত্রীকে কাগজের রিপোর্টার হিসেবে শের জঙ্গ এর ইন্টারভিউ নিতে জেলে পাঠান। শের জঙ্গ এর দৃঢ় চরিত্র ও বিভিন্ন গুণাবলীতে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন নির্মলা দেবী। ১৯৩৮ সালে জেল থেকে ছাড়া পাবার এক সপ্তাহের মধ্যে নির্মলা দেবীকে বিয়ে করেন শের জঙ্গ। নির্মলা দেবী পরে দিল্লীর ইন্দ্রপ্রস্থ কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল হন।
শের জঙ্গ নিজের শিক্ষাকে কখনো থামিয়ে রাখেন নি। জেলে বসেও উনি জার্মান ও হিন্দি ভাষা শেখেন। বাংলা শেখেন বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের কাছ থেকে। আগে থাকতেই জানতেন ইংরেজি, উর্দু ও ফার্সি। উর্দুতে লিখতেন শায়েরী। বিয়ের পর নির্মলা দেবীকে সঙ্গে নিয়ে সির্মৌরে বসবাস শুরু করেন আর কিছুদিনের মধ্যেই দুজনেই জড়িয়ে পড়েন “প্রজা মন্ডল” আন্দোলনে।
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর পরই পাকিস্তান কাশ্মীর দখলের চেষ্টা করল। শের জঙ্গ আগেভাগেই পাকিস্তানের প্ল্যানের খবর পেয়ে কাশ্মীর চলে যান। সেখানে গিয়ে দু ব্যাটালিয়ন সৈন্য জোগাড় করেন। এই বাহিনীর নাম হয় কাশ্মীর ন্যাশনাল মিলিশিয়া। নিজের একক প্রচেষ্টায় জোগাড় করেন অস্ত্র ও যুদ্ধের সরঞ্জাম। দুই ব্যাটেলিয়ান সৈন্যকে নিজের হাতে প্রশিক্ষিত করেন। শের জঙ্গ বিশেষভাবে গেরিলা যুদ্ধের ব্যাপারে শিক্ষিত ছিলেন। মানুষ খেকো বাঘের পেছনে জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে, ওঁর এই ব্যাপারে বিশেষ ব্যুৎপত্তি হয়েছিল। ভারতীয় সেনা কাশ্মীরে পৌঁছানোর আগেই কাশ্মীর ন্যাশনাল মিলিশিয়া পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর ওপর আঘাত হানে।
কয়েক দিন পরেই ভারতের সৈন্য কাশ্মীরে প্রবেশ করে। কাশ্মীর ন্যাশনাল মিলিশিয়া তখন ভারতের সেনার সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই শুরু করে পাকিস্তানি মুজাহিদিনদের সঙ্গে। ভারত জয়ী হয়। ১৯৪৮ সালে ভারতের সরকার ও ভারতীয় সেনাবাহিনী এই অসাধারণ বীরত্বের জন্য শের জঙ্গকে “কর্নেল” উপাধিতে ভূষিত করেন। বীরের যোগ্য সম্মান পান শের জঙ্গ।
দিন কাটে দেশসেবায়। ভারত সরকার ওঁর ওপর দায়িত্ব দেন দেশভাগের পরে ভারতে আগত শিখ ও হিন্দু রিফিউজিদের দেখাশোনা করার। সেখানেও অসাধারণ কর্মকুশলতার জন্য রিফিউজিদের পুনর্বাসন সুষ্ঠভাবে হয়। ১৯৫৩ সালে গোয়ার ভারতভুক্তি ত্বরান্বিত করার জন্য উনি চলে যান গোয়ায়। সেখানে গিয়ে তৈরি করেন গেরিলা সৈন্যদল। ১৯৬১ অবধি গেরিলা সংঘাত চলে এবং উনি পর্তুগীজদের পরাজিত করেন। তারপরে গোয়ার ভারতভুক্তি হয়। সেখানেই থেমে থাকেননি শের জঙ্গ। ১৯৬৭ সালে পূর্ব পাকিস্তনের মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধাদের ট্রেনিং এর দায়িত্ব নেন। আগেই বলা হয়েছে, উনি গেরিলা যুদ্ধের ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। প্রায় ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে উনি ওঁর ক্যাম্পে গেরিলা যুদ্ধের ট্রেনিং দেন। ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পেছনে এই মানুষটির বিরাট অবদান ছিল।
১৯৭২ সাল থেকে নিজের সর্বশক্তি নিয়োগ করেন ব্যাঘ্র সংরক্ষন প্রকল্পের উন্নতিকল্পে। এককালের শিকারি রূপান্তরিত হন আন্তর্জাতিক মাপের সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞে। জঙ্গল ও তার পশু পাখিদের নিজের হাতের তালুর মতন চিনতেন, ভালোবাসতেন। ভারত সরকারের বেশ কিছু পরিবেশ নীতির পেছনে শের জঙ্গ এর সুস্পষ্ট অবদান আছে।
নানা ভাষায়, বিভিন্ন বিষয়ের উপরে অনেক বই লিখেছেন। ট্রাইস্ট উইথ টাইগার্স (১৯৬৭), র্যাম্বলিংস ইন টাইগারল্যান্ড (১৯৭০), কবিতার বই এক আউর অনেক ক্ষণ, গান-লোর, প্রিজন ডেজ। ১৯৩৫ সালে লিখেছেন উর্দু উপন্যাস “ওড়াকে পারিনা”, হিন্দিতে লিখেছেন কবিতাগুচ্ছ “লোরিয়া”। “ট্রাইস্ট উইথ টাইগার্স “ও “র্যাম্বলিংস ইন টাইগারল্যান্ড” এই বই দুটি জঙ্গল ও বাঘের ওপর লেখা বই হিসেবে সম্পদ বিশেষ।
এক পরিবেশ প্রেমীর কথায়; ” ‘Tryst with Tigers’ and ‘Ramblings in Tigerland’ are books that deserve a place of pride on every naturalist’s bookshelf. The stories are every bit as compelling as the much-loved hunting accounts of Jim Corbett. In fact, Jung’s accounts are richer in many respects as the unprejudiced reader is bound to discover.”
কর্নেল শের জঙ্গ দিল্লিতে ১৯৯৬ সালের ১৫ই জানুয়ারি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। কিছুদিন আগে, ভারতের এই মহান বীরের স্মৃতির উদ্দেশ্যে হিমাচল প্রদেশ সরকার সিম্বালয়ারা ন্যাশনাল পার্ককে “শের জঙ্গ ন্যাশনাল পার্ক” নামকরণ করেন। দুঃখের ব্যাপার, ভারতের এই বীর সন্তান না পেয়েছেন কোন পদ্ম সম্মান, না স্থান পেয়েছেন ভারতবর্ষের ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকের পাতায়। এমনকি হিমাচল প্রদেশের কোন রাস্তাও ওঁর নামে নেই। স্বাধীনতার পরে বাহাত্তর বসন্ত পেরিয়ে গেলেও ভারত মায়ের যোগ্য সন্তানদের নাম এখনো যে স্বর্ণাক্ষরে লেখা সম্ভব হলো না, এটাই হয়তো উত্তরপুরুষদের ব্যর্থতা।