একদিন এমনই এক বিষণ্ণ সন্ধ্যেবেলায় হোটেলের রুমে ফিরে এসে, চুকচুক করে মদ্যপান করতে করতে হঠাৎই যুবতী স্ত্রীর প্রতি দরদ উথলে উঠল হারাধনদার। তারপর? মোবাইলে পড়ার জন্য স্ক্রল করুন নিচে...

Best Bengali Web Magazine

নম্বর মাহাত্ম্য

হারাধনদা সারা বছর ব্যবসার কাজে বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ান। বাড়িতে যুবতী, সুন্দরী , আকর্ষণীয়া স্ত্রী আর বছর পাঁচেকের ফুটফুটে কন্যে- ব্যস্ততার জন্য কাউকেই বিশেষ সময় দিতে পারেন না।

একদিন এমনই এক বিষণ্ণ সন্ধ্যেবেলায় হোটেলের রুমে ফিরে এসে, চুকচুক করে মদ্যপান করতে করতে হঠাৎই যুবতী স্ত্রীর প্রতি দরদ উথলে উঠল। বেশ কিছুদিন হয়ে গেল বাড়ি ফেরা হয় নি। নাহ ! কালকেই বাড়ি ফিরবেন। এই ভেবে আবেগে গদগদ হয়ে স্ত্রীর সাথে প্রেমালাপ করবেন ভেবে বাড়িতে ফোন করলেন। কিন্তু স্ত্রীর পরিবর্তে কন্যে ফোন তুলল। পরবর্তী কথকপথন নিম্নরূপ –

― তুমি কী করছো , সোনা !
― পুতুল খেলছি, ড্যাডি …
― তোমার মম কোথায়, সোনা !
― মম, বেডরুমে খাটের ওপরে লেপ মুড়ি দিয়ে সুইমিং সুইমিং খেলছে, ড্যাডি !
― সাঁতার খেলেছে ! তুমি কী করে বুঝলে, সোনা !
― বাহ্ ! সাঁতার কাটার সময় আমাদের জামাকাপড় খুলে, তবে জলে নামতে হয় না…!
― সর্বনাশ, তোমার মমের শরীর ঠিক আছে তো, সোনা !
― হ্যাঁ, ড্যাডি, মম সাঁতার কাটতে কাটতে রীতিমত আনন্দে চিৎকার করছে!
― সেকি, মম জলে ডুবে গেলে কী হবে, সোনা ! তুমি বরং শিগগিরি ওপরে গিয়ে, মমকে সুইমিং পুল থেকে তুলে বলো, ড্যাডি ফোন করেছে…
― Don’t Worry , মম যাতে ডুবে না যায় সেইজন্য রাজ আঙ্কেলও লেপের ভেতর মমের সাথে সাঁতার কাটছে ড্যাডি … !
― ওহ , মাই গড ! তলে তলে এত কিছু !
― কত কিছু , ড্যাডি !
― ও তুমি বুঝবে না, সোনা। তুমি বরং এক কাজ করো । ছুটে গিয়ে মমকে বলো, ড্যাডি তোমার মমের পুকুরে মাছ ধরবে বলে একটা এইয়া বড় ছিপ নিয়ে এসে বাড়ির দরজা খুলছে … তারপর কী দেখলে আমায় এসে বলবে, ওকে ! আমি কিন্তু ফোন ধরে আছি …

কিছুক্ষণ পরে ছোট্ট সোনা দৌড়তে দৌড়তে এসে বলল,
― ড্যাডি , ড্যাডি , তোমার ছিপ নিয়ে আসার কথা শুনে, মম দৌড়ে বাথরুমে ঢুকতে গিয়ে পা পিছলে বাথরুমে পড়ে গেছে… মনে হয়, অজ্ঞান হয়ে গেছে…
― গুড, আর তোমার রাজ আঙ্কেল !
― রাজ আঙ্কেল তো, ভয়ে দোতলার জানলা খুলে নিচে ঝাঁপ দিয়েছে !
― দেখো তো গিয়ে, বেঁচে আছে কিনা, সোনা !
কিছুক্ষণ পরে ছোট্ট সোনা উত্তেজিত হয়ে দৌড়তে দৌড়তে এসে বলল,
― ড্যাডি, ড্যাডি রাজ আঙ্কেলও বাড়ির পেছনের সুইমিং পুলে পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে… মনে হয়, মরে গেছে…

হারাধনবাবু সুইমিং পুলের কথা জেনে এবার একটু চিন্তিত হয়ে পড়লেন। কিছুটা দ্বিধান্বিত ভঙ্গিতে বললেন,
― তুমি , কোন সুইমিং পুলের কথা বলছো, সোনা !
― আরে যে সুইমিং পুলের জল তুমি লাস্ট মান্থে বার করে দিয়েছিলে না , ড্যাডি ! সেই শুকনো সুইমিং পুলে… হুমম…
― সুইমিং পুল ! আমার বাড়িতে ! স্ট্রেঞ্জ ! আচ্ছা আমি, কোন নম্বরে ফোন করেছি, সোনা !
― এই তো, 78910…

হারাধনবাবু বেশ কিছুক্ষণ ধরে মাথা চুলকে, ঘেঁটে গিয়ে, শেষে বললেন,
” কিন্তু এমন কোনও ফোন নম্বর তো আমাদের আছে বলে ― মনে পড়ছে না, সোনা !!! “

লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে?

লেখক পরিচয় |

বিজ্ঞানের স্নাতক লেখক বর্তমানে CESC LTD. এর বিদ্যুৎ সংবহন বিভাগে কর্মরত। কর্মসূত্রে দিন-রাত তিলোত্তমা আর তার বাসিন্দাদের বৈচিত্রপূর্ণ জীবনকথাই, হাসির মোড়কে উঠে আসে লেখকের কলমে।

Start typing and press Enter to search