২০১২ সালের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহের এক সন্ধ্যা। নতুন দিল্লীর সিজিও কমপ্লেক্সের ২ নম্বর ব্লকে আইটিবিপির হেডকোয়ার্টারে জোর তৎপরতা। কেন? মোবাইলে পড়তে স্ক্রল করুন নিচে...

রহস্যময় ভিনগ্রহী – পর্ব এক

২০১২ সালের অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহের এক সন্ধ্যা। নতুন দিল্লীর সিজিও কমপ্লেক্সের ২ নম্বর ব্লকে আইটিবিপির হেডকোয়ার্টারে জোর তৎপরতা। তৎপরতার কারন সেদিন লাদাখের আইটিবিপির সেক্টর হেডকোয়ার্টার থেকে আসা একটি জরুরি রিপোর্ট। রিপোর্টের বিষয়বস্তু বড়ই অদ্ভুত। লাদাখের ঠাকুং এ বেস করে থাকা আইটিবিপি-র একটি দল অগস্ট মাসের ২ তারিখ থেকে ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ১০০বার এমন কিছু জিনিস দেখেছে, সাধারন বুদ্ধিতে যার ব্যাখ্যা দেওয়া যায় নি।

প্রতিবারই ভারত চীন সীমান্তের প্যাংগং সো লেকের ওপারে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল এ চীনের দিক থেকে কিছু আলোকিত বস্তুকে তারা ভার্টিক্যালি ওপরে উঠতে দেখেছে। ওই বস্তুগুলি কোন প্লেন বা ড্রোন নয়। প্রথম প্রথম এই সাইটিংগুলিকে জওয়ানরা নিজেদের চোখের ভুল বলে মনে করত এবং রিপোর্ট করত না। কিন্তু পরে এই অজানা আলোকিত বস্তুগুলিকে যখন তারা প্রায়ই দেখতে শুরু করল তখন সেক্টর হেড কোয়ার্টার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে শুরু করে। একইসাথে লেহ্ থেকে সেনাবাহিনীর ১৪কোর ও দিল্লীর সেনাভবনে এই একই রিপোর্ট পাঠায়।

প্যাংগং লেক অঞ্চলে ঘন ঘন এই অদ্ভুত আলোকিত বস্তুগুলিকে চীনের গুপ্তচর যান কিনা সে বিষয়ে ১৪ কোর কম্যান্ডার চিন্তিত ছিলেন। একই সাথে চীনের দিক থেকে আসা গুপ্তচর ড্রোন দেখার বিষয়েও একটি পুংখানুপুংখ রিপোর্টও তারা দিল্লীতে পাঠায়।

সেনাবাহিনী বিষয় টিকে গুরত্ব দেয় এবং একটি মোবাইল গ্রাউন্ড বেসড র‍্যাডার ইউনিট এবং একটি স্পেকট্রাম অ্যানালাইজার প্যাংগং সো এলাকাতে পাঠায়। ১৬০ কিলোমিটার লম্বা প্যাংগং সো লেকের কাছেই একটি পাহাড়ের ওপর র‍্যাডার এবং স্পেক্ট্রাম অ্যানালাইজার যন্ত্র বসানো হয়। দেখা যায় যে খালি চোখে ওই অজানা আলোকিত বস্তুগুলোকে দেখা গেলেও র‍্যাডার বা স্পেকট্রাম অ্যানালাইজার তাদের ধরতে পারছে না। এ থেকে বোঝা যাচ্ছিল যে বস্তুগুলো ধাতব নয়। দেখা যায় যে মাটি থেকে একদম খাড়াভাবে এরা উড়ছে তারপর বেশ খানিকক্ষণ এদিক সেদিক উড়ে শেষে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। সেনাবাহিনীরতরক থেকে একটি ড্রোন ওই ভাসমান বস্তুটির দিকে পাঠানো হয় কিন্তু ড্রোন বস্তুটির নাগাল পায় নি।

সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে প্যাংগং এর ১৫০ কিমি দূরে হ্যানলের ইন্ডিয়ান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরির একদল জ্যোতিজ্ঞিানী এই ফ্লাইং লুমিনাস অবজেক্টগুলিকে নিরীক্ষণ করেন কিন্তু তারাও কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি। কিন্তু তারা একটি বিষয়ে নিশ্চিত হন- তারা বলেন যে বস্তুগুলি ‘নন সেলেস্টিয়াল’, অর্থাৎ কোন উল্কা বা তারা নয়।

রহস্য আরো ঘনীভূত হয় যখন এলাকার মানুষজন জানান যে বহু বছর ধরেই এই রহস্যময় বস্তুদের প্যাংগং সো এলাকাতে দেখা যায়। এও জানা যায় যে ২০০৩ সালের শেষ দিকে লেহ্ র ১৪নং কোর নয়াদিল্লীর সেনা ভবনে আনআইডেন্টিফায়েড লুমিনাস অবজেক্ট দেখার ব্যাপারে খবর দিয়েছিল। লেহ্ তে সেই সময়ে হওয়া একটি সেনা অফিসারদের মিটিং এ বিষয়টি উঠলে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল এন সি ভিজ অত্যন্ত ক্রদ্ধ হন। কোন গুরুত্ব না দিয়ে সেনাদের হ্যালুসিনেশান বলে বিষয়টিকে উড়িয়ে দেন তিনি।

কিন্তু বিষয়টি নিয়ে জল ঘোলা বন্ধ হোল না। কেউই সঠিকভাবে বলতে পারছিল না বস্তুগুলি আসলে কি৷ এর মধ্যেই একটি নতুন তথ্য জনসমক্ষে চলে এল…

দ্বিতীয় পর্ব: রহস্যময় রোবট

Series Navigationরহস্যময় ভিনগ্রহী – পর্ব দুই >>

লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে?

লেখক পরিচয় |

Start typing and press Enter to search