তিনি বলেছিলেন চার আর্যসত্য ও অষ্টাঙ্গিক মার্গ-এর কথা। কিন্তু তাঁর মহাপরিনির্বাণের পর তাঁর শিষ্যদের মতবাদের মধ্যে এত বিভিন্নতা চলে এল কোথা থেকে? কৌশিক সরকার ৭ টি খন্ডে বৌদ্ধধর্মের এই ভেঙ্গে যাওয়ার ইতিহাস বলেছেন। মোবাইলে পড়ার জন্য স্ক্রল করুন নিচে...

বৌদ্ধধর্মে যান মাহাত্ম্য ২য় খন্ড

ভগবান তথাগত বুদ্ধের মহাপরিনির্বাণের তিন মাস আগের ঘটনা। বৈশালীতে অবস্থানকালে তিন মাস পরে তিনি তাঁর পরিনির্বাণের দিন ঘোষণা করেছেন। আনন্দ ভগবানের কাছে জানতে চাইলেন তাঁর অবর্তমানে কে এই সংঘ পরিচালনা করবেন? ভগবান হেসে বললেন, “আনন্দ, ভিক্ষুগণ আমার কাছ থেকে আর কি প্রত্যাশা করে? যা শিক্ষা দেবার তা পূর্বেই দিয়েছি। আমাকে ভিক্ষুসংঘ পরিচালনা করতে হবে বা আমার পরে ভিক্ষুসংঘের কি হবে এরূপ চিন্তা বুদ্ধগণ করেন না।” অতএব হে আনন্দ

“অন্তদীপা বিহরত অত্তসরণা অনুসরণা,
ধম্মদীপা বিহরত ধম্মসরণা অনুসরণা।”

অর্থাৎ নিজের প্রদীপ নিজে হয়ে বিহার কর, আত্মশরণ হও। নিজের মুক্তির জন্য অন্যের ওপর নির্ভর কোরো না। ধর্মদীপ হয়ে বিহার কর, ধর্মের শরণাগত হও। এরপর ভগবান ভিক্ষু পরিবৃত হয়ে বৈশালী থেকে তাঁর পরিনির্বাণ স্থান কুশিনগরের দিকে যাত্রা করলেন। পথিমধ্যে ভোগনগরে কিছুদিন অবস্থানকালে ভগবান ভিক্ষুগণকে সম্বোধন করে বললেন, “হে ভিক্ষুগণ, আমার অবর্তমানে যদি কখনও কোন ভিক্ষু, থের ভিক্ষু, বহুসংখ্যক থের ভিক্ষু বা সংঘের কাছ থেকে আমার নাম করে কিছু শোন, যদি তিনি বলেন যে আমি স্বয়ং ভগবানের মুখ থেকে শ্রবণ করেছি তাহলে তোমরা ওই ভিক্ষুর বাক্যের অভিনন্দন বা অগ্রাহ্য কোনটাই করবে না। অভিনন্দন বা অগ্রাহ্য না করে তোমরা সূত্র ও বিনয়ের সঙ্গে তার তুলনা করবে। সূত্র ও বিনয়ের সঙ্গে যদি সেই বাক্যের সামঞ্জস্য দৃষ্ট না হয় তাহলে বুঝবে তা আমার বাণী নয় এবং ওই ভিক্ষুই ভ্রান্ত। আর যদি সামঞ্জস্য দৃষ্ট হয় তবেই তা আমার বাণী বলে গ্রহণ করবে।”

Series Navigation

লেখাটি আপনার ভাল লেগেছে?

লেখক পরিচয় |

কৃষ্ণনগরের স্থায়ী বাসিন্দা কৌশিক সরকারের লেখালেখির বাইরে আগ্রহের মূল বিষয় ডাকটিকিট সংগ্রহ, গান শোনা, বেড়িয়ে পড়া। বুদ্ধের জীবন ও বাণী বিষয়ে তার গ্রন্থ 'নমো তস্য' বিশেষভাবে প্রশংসিত।

Start typing and press Enter to search